, বুধবার, ২২ মে ২০২৪ , ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


যুক্তরাষ্ট্রে কেন বাঙালি হত্যা: জবাব চান প্রধানমন্ত্রী

  • আপলোড সময় : ০১-০৫-২০২৪ ১০:২১:৩৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০৫-২০২৪ ১০:২১:৩৪ পূর্বাহ্ন
যুক্তরাষ্ট্রে কেন বাঙালি হত্যা: জবাব চান প্রধানমন্ত্রী
এবার যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করলেও তারা নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে এর জবাব চেয়েছেন।  

গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের আগে দেয়া বক্তব্যে তিনি সম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যার বিষয় নিয়ে কথা বলেন। সবশেষ ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার নিউ ইয়র্কের বাফেলোতে। সেখানে ইউসুফ এবং বাবুল নামের দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

এর আগে ৭ এপ্রিল জাকির হোসেন খসরু নামের আরেক বাংলাদেশির ওপর হামলা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান ১০ এপ্রিল। এর পর ১২ এপ্রিল মিশিগান রাজ্যের ওয়ারেন সিটিতে নিজের বাড়িতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান হোসেন আলী রাজি নামের এক তরুণ।

এরও আগে ২৭ মার্চ নিউ ইয়র্কে নিজের বাসায় পুলিশের গুলিতে এক নিহত হন উইন রোজারিও নামে ১৯ বছর বয়সী এক তরুণ এসব ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের বাঙালি পর পর কতজন মারা গেছে…সেদিনও দুজন বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।

“তারা সেখানে গেছে জীবন-জীবিকার জন্য। তাদেরকে এভাবে কেন হত্যা করা হবে? তারা তো কোনো অপরাধ করেনি। ছোট বাচ্চা ছেলেরা পর্যন্ত তাদের হাত থেকে রেহাই পায় না।”
তিনি বলেন, “ছোট একটা শিশু সে প্রেসিডেন্টকে কি বলেছে এজন্য তাকে ঘরে ঢুকে গুলি করে মেরেছে। বাড়ির ভেতর ঢুকে সেই বাচ্চাকে গুলি করে মেরেছে। কী জবাব দেবে?
“যারা মানবাধিকারের গীত গায় এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার খুঁজে বেড়ায় তারা এর কী জবাব দেবে? আমি জবাব চাই সেই মানবাধিকার সংস্থা, জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট এবং যারা আমাদের খবরদারি করে তাদের কাছে। আমি জবাব চাই যে, আমার বাঙালি কেন মারা যাবে?”

ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নির্মম হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলা আন্দোলন দমনের সমালোচনাও করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “এখানে আন্দোলনের সময়ে একজন মহিলা প্রফেসর বলছেন, ‘আমি ভার্সিটির প্রফেসর’। পুলিশ যেভাবে তাকে ধরে হাতমোড়া দিয়ে মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে চেপে তাকে অ্যারেস্ট করেছে!

“সেখানে ছাত্র-শিক্ষক, তাদের হাতে লাঠি ছিল না, আগুনও ছিল না। তারা কিন্তু পুলিশের বিরুদ্ধে মারমুখীও ছিল না। তারপরও আমেরিকার পুলিশ যে আক্রমণ করেছে, এতে সেই দেশে মানবাধিকার যে কতটুকু আছে সেটি প্রশ্ন, কথা বলার স্বাধীনতা কতটুকু আছে সেটি প্রশ্ন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার অধিকার কতটুকু আছে সেটি আমাদের প্রশ্ন।”

যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে সরকার প্রধান বলেন, “বাংলাদেশের উপর মানবাধিকারের রিপোর্ট লেখে কিন্তু নিজেদের চেহারাটা আয়নায় দেখেনা। তারা যেভাবে আচরণ করে আমাদের পুলিশ তো সেভাবে করেনি। “ধৈর্যের পরিচয় দিতে গিয়ে উল্টো পুলিশ বিএনপির হাতে মার খেয়েছে। উল্টো তারা পুলিশকে যেভাবে মাটিতে ফেলে পিটিয়েছে, এভাবে আমেরিকায় যদি একটা পুলিশের গায়ে কোনো দলের লোক হাত দি‌ত, তারা কি করত?”

‌তি‌নি বলেন, “অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুকে মায়ের কোল থেকে নিয়ে তাকে হত্যা করা, প্রফেসরদের ওপর জুলুম করা, পুলিশ ম‌হিলা প্রফেসরকে যেভাবে মাটিতে ফেলে হাতকড়া পরিয়েছে, এর জবাব আমরা চাই। এটা তো সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন।”